জামদানি শাড়ী
অতীত বাংলার মসলিনের গৌরবদীপ্তের আংশিক রেশ নিয়ে আজো অনন্য। প্রাচীনকাল থেকে আমাদের এ শিল্প বাংলাদেশের ঐতিহ্যকে ধারণ করে আসছে। রঙ-বেরঙের সুতা আর প্রধানত প্রকৃতিনির্ভর গ্রামীন নকশায় কারুশিল্পীদের সুনিপূন হাতে নান্দনিক রুপ ও বৈচিত্রের এক অনবদ্য সৃষ্টি জামদানি। অতি সাধারন উপাদানে আমাদের কারুশিল্পীদের মনের মাধুরী মেশানো রঙের বহুবিধ ব্যবহার ও কারুকাজের সমন্বয় ঘটছে জামদানী তৈরিতে। কালের আবর্তে আমাদের অনেক কিছু হারিয়ে গেলেও ঐতিহ্যবাহী মসলিনের উত্তরাধিকার জামদানি শিল্প স্বকীয়তার মাঝে আজো বিকশিত হচ্ছে। এখন দেশের বাজারে জামদানি পন্যের চাহিদা ক্রমেই বৃদ্ধির পাশাপাশি বিশ্ববাজারে জামদানি পন্যের চাহিদা ক্রমেই বৃদ্ধির পাশাপাশি বিশ্ববাজারও প্রসারিত হচ্ছে। একান্তভাবে দেশীয় যন্ত্রপাতি ও কাঁচামালের ব্যবহারে শিল্পীদের মৌলিক শিল্পবোধ ও ধ্যান ধারনায় সৃষ্টি জামদানি। আজ পর্যন্ত পৃথিবীর আর কোন দেশের কারিগরদের পক্ষে জামদানি তৈরি সম্ভব হয়নি। এ পন্যের আলাদা বৈশিষ্ট হচ্ছে, এর শিল্পীরা সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে নেই। আদিকাল থেকেই রাজধানী ঢাকা থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে নারায়ণগঞ্জ জেলাধীন রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রাম, সোনারগাঁ ও সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার কিছু এলাকায় জামদানি কারুশিল্পীদের বংশানুক্রমিক বসবাস। জামদানি শিল্পীদের অন্যত্র নিয়ে গিয়ে এটি তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু এ প্রচেষ্টা সফল হয়নি। কারন এ শিল্প বংশানুক্রমিক পারিবারিক পরিমন্ডলে সার্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে যে শিল্পভহবন তৈরি করেছে, তা বিশ্বের আর কোথাও নেই। তাছাড়া শীতলক্ষ্যা নদীর পানি থেকে ভস্মিত বাষ্প জামদানি সুতা প্রস্ত্তুত ও কাপড় বুননের জন্য অনুকূল। প্রয়োজন ও সময়ের বাস্তবতায় এ শিল্পের বিভিন্ন প্রতিকূলতাকে উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে জামদানি তাঁতিদের স্বর্নযুগের পুনঃনির্মানের উদ্যোগ গ্রহনের সচেতনতার দায়িত্ব আমাদের সবার।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস